Saturday, 7 March 2015

মানুষই সেরা: ড. মোহাম্মদ আমীনের অনবদ্য গল্পগ্রন্থ / অনুসিন্থিয়া জাহান চৌধুরী

 মানুষই সেরা

‘মানুষই সেরা’ বইটি সামাজিক জীব মানুষকে নিয়ে লেখা। লেখক ড. মোহাম্মদ আমীন। এ বইয়ে লেখক চমৎকার একটি গল্পের মধ্য দিয়ে আমাদের পরিবেশ সচেতন করে তোলার প্রয়াস নিয়েছেন। আমাদের
পরিবেশ দিন দূষিত হচ্ছে, তার প্রধান কারণ মানুষ। অনেক মানুষ তাদের ঘরের আবর্জনা রাস্তায় যেখানে সেখানে ফেলে রাখে। আবার এমন অনেক মানুষ আছে, যারা যেখানে সেখানে মলমূত্র ত্যাগ করে। মানুষের এই নির্বিচার কর্মকাণ্ডে পশুরা পর্যন্ত ক্ষুব্ধ, বিরক্ত। মানুষের এমন কর্মকাণ্ড পশুদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রাকেও ব্যহত করে দিচ্ছে। তাই পশুরা মানুষের প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে।
বইটির গল্গ অনুযায়ী, মানুষের নির্বিচার পরিবেশ দূষণমূলক কাজ ক্রমশ অসহণীয় পর্যায়ে চলে যাচ্ছে দেখে পশু পাখিরা রেগে যায়। তারা দাবি করে, পরিবেশের প্রতি যারা এমন আচরণ করে সে মানুষ কখনও শ্রেষ্ঠ হতে পারে না। পশুদের দাবি মানুষ নয়, তারাই শ্রেষ্ঠ। মানুষ তখনই শ্রেষ্ঠ হবে, যখন  সে কেবল নিজের উপকার নয়, তার চারপাশের পরিবেশকেও সুন্দর রাখবে ও উন্নত করবে। কিন্তু মানুষ তার বুদ্ধি ও কথা বলার ক্ষমতা দিয়ে জোরপূর্বক শ্রেষ্ঠত্ব দাবি করে বিশ্বে রাজত্ব করছে। এটি পশুরা আর মেনে নিতে চাইল না।
মানুষ যতই পরিবেশ দূষণ করতে থাকল, শক্তি ততই কমতে থাকল। অন্যদিকে পশুদের শ্রেষ্ঠত্বের দাবি আরও জোরালো হয়ে ওঠে। তারা মানুষের শ্রেষ্ঠত্ব অস্বীকার করে নিজেরাই বিশ্বে রাজত্ব করার সকল আয়োজন সম্পন্ন করে নেয়। অবশেষে মনুষ্য সমাজের এক নিরূপায় নেতা বিহীত ব্যবস্থার জন্য এক সাধুর কাছে গেলেন। সাধু বললেন: মানুষ যদি তার সমস্ত ইচ্ছা শক্তি দিয়ে চেষ্টা করে, তবে পরিবেশ দূষণকে থামাতে পারবে। একমাত্র তখনই মানুষ দাবি করতে পারবে যে, সে-ই শ্রেষ্ঠ। তারপরও মানুষ কিছু করতে পারল না। অবশেষে নেতা আত্মহত্যার প্রত্যয় নিয়ে জঙ্গলে চলে গেলেন। সেখানে গিয়ে দেখতে পান এক বিড়াল কীভাবে তার মলমূত্রকে মাঠি-চাপা দিচ্ছে। বিড়ালের কর্ম থেকে তিনি শিক্ষা নিলেন কীভাবে বর্জ্যকে নিরাপদ রাখতে হয়।
গল্পের মধ্য দিয়ে লেখক জানাতে চেয়েছেন যে, মানুষ তার সাধারণ জ্ঞান বুদ্ধি দিয়ে বিবেচনা করলে পরিবেশ দূষণের যথার্থ কারণগুলো খুঁজে, নিজেদের শুধরে পরিবেশকে বাঁচিয়ে প্রমাণ করতে পারবে, মানুষই সেরা।

No comments:

Post a Comment