Saturday, 7 March 2015

খরগোশ ও কচ্ছপ/ এস এম আবীর চৌধরী মীম

পশুরাজ্যে আনন্দের জোয়ার।

অফিস-আদালতে বাংলা লেখার নিয়ম: ড. মোহাম্মদ আমীনের অসাধারণ একটি গ্রন্থ/ হায়াৎ মামুদ

অফিস-আদালতে বাংলা লেখার নিয়ম: ড. মোহাম্মদ আমীনের   অসাধারণ একটি গ্রন্থ/হায়াৎ মামুদ

অফিস-আদালতে বাংলা লেখার নিয়ম’ ডে. মোহাম্মদ আমীনের লেখা একটি গ্রন্থ। বইটি শুধু রসকষহীন কোনো ব্যাকরণ নয়। ব্যাকরণের জটিল সূত্র বা নিয়-নীতিদিয়েও ভারাক্রান্ত করা হয়নি। এখানে সহজ-সরল ভাষায় প্রাত্যহিক কর্মজীবনে ব্যবহৃত প্রমিত বাংলা লেখার কৌশল বিধৃত করা হয়েছে। লেখক একজন চাকুরিজীবী। চাকুরিজীবী
হিসাবে বাস্তব অভিজ্ঞতার প্রতিফলন ঘটিয়ে তিনি বইটি
রচনা করেছেন। এখানে এমন সব শব্দ, বানান ও বাক্য নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে যেগুলো দাপ্তরিক কর্মকান্ডে প্রতিনিয়ত প্রয়োজন। বইটি এমনভাবে রচনা করা হয়েছেযাতে সরকারি-বেসরকারি সর্বস্তরের অফিষ-আদালত, শিক্ষপ্রতিষ্ঠান, চাকুরিজীবী, পেশাজীবী, সাংবাদিক, ছাত্র-শিক্ষক, ব্যবসায়ী, বিদেশ অবস্থানরত বাংলাভাষী ও সাধারণ মানুষ সহজে দৈনন্দিন কাজে ব্যবহৃত বাংলা শুদ্ধভাবে লেখার কৌশল রপ্ত করতে পারেন। শুদ্ধ ও প্রমিত বানান শেখার জন্য বইটি পেশা ও বয়স-নির্বিশেষে সবার হাতের কাছে রাখা প্রয়োজন- সকলের এমন ধারণাই পোষণ করি।

রঙ্গরসে বাংলা বানান: ভূমিকা নয়, স্বাগতম/ হায়াৎ মামুদ





ভূমিকা নয়, স্বাগতম

হায়াৎ মামুদ

বাংলা আমাদের মাতৃভাষা ও রাষ্ট্রভাষা, একইসঙ্গে দুটোই। ১৯৫২ সালের ২১শে ও ২২শে ফেব্র“য়ারি রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে যাঁরা শহিদ হয়েছিলেন তাঁরাই কিন্তু তাঁদের অজান্তে
স্বাধীন  সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ রাষ্ট্রটির বীজ বপন করেছিলেন। আমাদেরই উদাহরণে এখন আন্তর্জাতিকভাবে বিশ্বমাতৃভাষা দিবস ঘোষণা করেছে জাতিসংঘ।
সবই অতি উত্তম। কিন্তু এ সবের অন্দরমহলে লুকোনো আরেকটা কথাও আছে, যা অন্যেরা জানে না। সেটি হল মাতৃভাষা ও রাষ্ট্রভাষার প্রতি আমাদের সাম্প্রতিক অবহেলা। এই দুর্লক্ষণ অনেকেরই নজর এড়ায় নি, এবং তাঁরাই এগিয়ে আসছেন এর প্রতিকারকল্পে কিছু একটা করার জন্যে।

বাক্প্রত্যঙ্গ সক্রিয় থাকলে সব মানুষই কথা বলে নিজের মনের ভাব প্রকাশ করে থাকে, তা যে-ভাষাতেই হোক-না কেন। অথচ ‘ভাষা’ বিষয়টি আদৌ সহজ কোনো ব্যাপার নয়। তাকে শিখতে হয় অনেক কষ্ট করে। বলা-কওয়া, লেখালেখি, ভাষণ দেওয়া-কত কিছুই না। সবই আয়াসনির্ভর ও আয়ত্তসাপেক্ষ। সে কারণেই নির্ভূল লেখার জন্যে সব ভাষাতেই কত অসংখ্য ধরনের বইপত্তর।
 নিজের মা ও মাতৃভাষা সমার্থক। এমন কথা অনেক আগে থেকেই বহু মনস্বী ব্যক্তি উচ্চারণ করে আসছেন। কথাটি খাঁটি সত্য, কিন্তু এই সত্যকে উপলব্ধি করার জন্য নিষ্ঠা আবেগ অনুভূতি ইত্যাদি বহুকিছুর প্রয়োজন, এবং সেইসঙ্গে দরকার নিরন্তর চর্চা- বলার ও লেখার।
‘রঙ্গরসে বাংলা বানান’ যে অন্তর্গত প্রেরণা থেকে ড. মোহাম্মদ আমীন লিখতে উদ্ধুদ্ধ হলেন তাঁর প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই। এ-বই মাতৃভাষাপ্রেমী সকল বাঙালির প্রয়োজন মেটাবে, তাতে আমার কোনো সন্দেহ নেই। বইটির বহুল প্রচার কামনা করি। হাওলাদার প্রকাশনীকেও ধন্যবাদ তাঁরা এই গুরুদায়িত্ব গ্রহণ করেছেন বলে।

মানুষই সেরা: ড. মোহাম্মদ আমীনের অনবদ্য গল্পগ্রন্থ / অনুসিন্থিয়া জাহান চৌধুরী

 মানুষই সেরা

‘মানুষই সেরা’ বইটি সামাজিক জীব মানুষকে নিয়ে লেখা। লেখক ড. মোহাম্মদ আমীন। এ বইয়ে লেখক চমৎকার একটি গল্পের মধ্য দিয়ে আমাদের পরিবেশ সচেতন করে তোলার প্রয়াস নিয়েছেন। আমাদের
পরিবেশ দিন দূষিত হচ্ছে, তার প্রধান কারণ মানুষ। অনেক মানুষ তাদের ঘরের আবর্জনা রাস্তায় যেখানে সেখানে ফেলে রাখে। আবার এমন অনেক মানুষ আছে, যারা যেখানে সেখানে মলমূত্র ত্যাগ করে। মানুষের এই নির্বিচার কর্মকাণ্ডে পশুরা পর্যন্ত ক্ষুব্ধ, বিরক্ত। মানুষের এমন কর্মকাণ্ড পশুদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রাকেও ব্যহত করে দিচ্ছে। তাই পশুরা মানুষের প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে।
বইটির গল্গ অনুযায়ী, মানুষের নির্বিচার পরিবেশ দূষণমূলক কাজ ক্রমশ অসহণীয় পর্যায়ে চলে যাচ্ছে দেখে পশু পাখিরা রেগে যায়। তারা দাবি করে, পরিবেশের প্রতি যারা এমন আচরণ করে সে মানুষ কখনও শ্রেষ্ঠ হতে পারে না। পশুদের দাবি মানুষ নয়, তারাই শ্রেষ্ঠ। মানুষ তখনই শ্রেষ্ঠ হবে, যখন  সে কেবল নিজের উপকার নয়, তার চারপাশের পরিবেশকেও সুন্দর রাখবে ও উন্নত করবে। কিন্তু মানুষ তার বুদ্ধি ও কথা বলার ক্ষমতা দিয়ে জোরপূর্বক শ্রেষ্ঠত্ব দাবি করে বিশ্বে রাজত্ব করছে। এটি পশুরা আর মেনে নিতে চাইল না।
মানুষ যতই পরিবেশ দূষণ করতে থাকল, শক্তি ততই কমতে থাকল। অন্যদিকে পশুদের শ্রেষ্ঠত্বের দাবি আরও জোরালো হয়ে ওঠে। তারা মানুষের শ্রেষ্ঠত্ব অস্বীকার করে নিজেরাই বিশ্বে রাজত্ব করার সকল আয়োজন সম্পন্ন করে নেয়। অবশেষে মনুষ্য সমাজের এক নিরূপায় নেতা বিহীত ব্যবস্থার জন্য এক সাধুর কাছে গেলেন। সাধু বললেন: মানুষ যদি তার সমস্ত ইচ্ছা শক্তি দিয়ে চেষ্টা করে, তবে পরিবেশ দূষণকে থামাতে পারবে। একমাত্র তখনই মানুষ দাবি করতে পারবে যে, সে-ই শ্রেষ্ঠ। তারপরও মানুষ কিছু করতে পারল না। অবশেষে নেতা আত্মহত্যার প্রত্যয় নিয়ে জঙ্গলে চলে গেলেন। সেখানে গিয়ে দেখতে পান এক বিড়াল কীভাবে তার মলমূত্রকে মাঠি-চাপা দিচ্ছে। বিড়ালের কর্ম থেকে তিনি শিক্ষা নিলেন কীভাবে বর্জ্যকে নিরাপদ রাখতে হয়।
গল্পের মধ্য দিয়ে লেখক জানাতে চেয়েছেন যে, মানুষ তার সাধারণ জ্ঞান বুদ্ধি দিয়ে বিবেচনা করলে পরিবেশ দূষণের যথার্থ কারণগুলো খুঁজে, নিজেদের শুধরে পরিবেশকে বাঁচিয়ে প্রমাণ করতে পারবে, মানুষই সেরা।

ড. মোহাম্মদ আমীনের বইয়ের তালিকা/ এস এম আবীর চৌধুরী মীম

ড. মোহাম্মদ আমীনের  বই

১. জর্জ ওয়াশিংটন হতে বারাক ওবামা; আগামী প্রকাশনী, ২০০৯, মূল্য - ৪০০ টাকা।
২. পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের জাতির পিতা; আগামী প্রকাশনী, ২০১১, মূল্য - ৩০০ টাকা।
৩. সাহিত্যে নোবেল বিজয়ী ১৯০১-২০১৩; আগামী প্রকাশনী, ২০১২, মূল্য - ৫০০ টাকা।
৪. বৈচিত্র্যময় তথ্যে সচিত্র নোবেল প্রাইজ; আগামী প্রকাশনী, ২০১১; মূল্য - ২০০ টাকা।
৫. বঙ্গবন্ধুর বাণী; আগামী প্রকাশনী; ৭০ টাকা।
৬. সুবেদার আহমদ হোসেন বীর প্রতীকের জবানিতে ঠাকুরগাঁওয়ের মুক্তিযুদ্ধ ; আগামী প্রকাশনী, ২০০৫, মূল্য - ৮০ টাকা।
৭. হাসতে হাসতে বাংলা শেখা ; আগামী প্রকাশনী, ২০০৬, মূল্য - ৮০ টাকা।
৮. বাংলা সাহিত্য ও ভাষা আন্দোলনের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস ; আগামী প্রকাশনী
৯. সহজ বাংলা উচ্চারণ; আগামী প্রকাশনী; ২০০৬, মূল্য - ৯০ টাকা।
১০. আহমদ ছফার চোখে বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবী; আগামী প্রকাশনী
১১. বঙ্গবন্ধু চিরন্তন মহামানব; আগামী প্রকাশনী, ২০১০; ১০০ টাকা।
১২. নন্দিত কান্না নিন্দিত হাসি ; আগামী প্রকাশনী; ২০০৭, মূল্য - ১০০ টাকা।
১৩. বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব : অলৌকিক মহিমা; আগামী প্রকাশনী, ২০০৬; মূল্য - ৭০টাকা।
১৪. দুই রাজ কুমারী ; আগামী প্রকাশনী, ২০০৮, মূল্য - ৭০ টাকা।
১৫. রমণীয় পাঁচালী; আগামী প্রকাশনী; ২০০৭, মূল্য - ৮০ টাকা।
১৬. খরগোশ ও কচ্ছপ; আগামী প্রকাশনী, ২০০৮, মূল্য - ৮০ টাকা।
১৭. বদল বাড়ির ভূত; আগামী প্রকাশনী, ২০১০, মূল্য -৭৫ টাকা।
১৮. মানুষই সেরা; আগামী প্রকাশনী, ২০০৫; মূল্য - ৪০ টাকা।
১৯. আন্তর্জাতিক দিবস ( ছোটদের); আগামী প্রকাশনী, মূল্য - ৭০ টাকা।
২০. অভয়নগরের ইতিহাস ; আগামী প্রকাশনী; ২০০৬, মূল্য - ৬০০ টাকা।
২১. মোহনীয় নরক; আগামী প্রকাশনী, ২০১৩; মূল্য - ৪৫০ টাকা।
২২. বাংলা বানানে ভুল কারণ ও প্রতিকার; আগামী প্রকাশনী, ২০১১, মূল্য - ৩০০টাকা।
২৩. তিলোত্তমা হাতিয়া: ইতিহাস ও ঐতিহ্য; হাতিয়া সমিতি, চট্টগ্রাম, ২০০১; মূল্য - ২০০টাকা।
২৪. তিলোত্তমা হাতিয়া : সমস্যা ও সম্ভাবনা; প্রকাশক, চেয়ারম্যানবৃন্দ, ২০০২, মূল্য - ১০০ টাকা।
২৫. সিঙ্গাপুর আইসিটি সম্মেলনে সৈয়দ আবুল হোসেন; আনন্দধারা, ২০১২, মূল্য - ২০০ টাকা।
২৬. উল্টোদেশে নন্দ ঘোষ; জাগৃতি প্রকাশনী, ২০১১; মূল্য - ১২৫ টাকা।
২৭. ভেদরগঞ্জের ইতিহাস; উপজেলা প্রশাসন; মূল্য - ১০০ টাকা।
২৮. চকরিয়ার ইতিহাস; আলহাজ্ব আনোয়ার হোসেন কন্ট্রকটার; ২০০২; মূল্য - ২০০ টাকা।
২৯. ম্যাজিস্ট্রেসি ও আদেশনামা; জাগৃতি প্রকাশনী; ২০০২, মূল্য - ৯০ টাকা।
৩০. ইসলামি মূল্যবোধ ও বঙ্গবন্ধু; জাগৃতি প্রকাশনী; ২০০৬, মূল্য - ২৫০ টাকা।
৩১. বাংলা সাহিত্যের অ আ ক খ; জাগৃতি প্রকাশনী, ২০০২, মূল্য - ৯০ টাকা।
৩২. বাংলা বানান ও শব্দ চয়ন; জাগৃতি প্রকাশনী; মূল্য -১২৫ টাকা।
৩৩. রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের কথা; জাগৃতি প্রকাশনী, ২০০৩; মূল্য - ৬৫ টাকা।
৩৪. বন মামলা দায়ের ও পরিচালনার কৌশল; জাগৃতি প্রকাশনী, ২০০২, মূল্য - ৬০ টাকা।
৩৫. পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক আইন; বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ, ২০০০; মূল্য - ৩৫০ টাকা।
৩৬. জামিন তত্ত্ব ও রায়; মেরিট প্রকাশনী; ২০০০, মূল্য - ৭০ টাকা।
৩৭. মামলা ও আইনি হয়রানি হতে নিষ্কৃতির উপায়; জাগৃতি প্রকাশনী, ২০০৩, মূল্য - ৬০ টাকা।
৩৮. প্রশাসনের ভাইরাস; নিজ, ১৯৯৯, মূল্য - ৭০ টাকা।
৩৯. আহমদ ছফার চোখে বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবী, জাগৃতি প্রকাশনী, মুল্য - ৭০ টাকা।
৪০. জল দুনিয়ার মানুষ; অনন্যা; ২০১১, মূল্য -১৬০ টাকা।
৪১. সময়ের পরশ পাথর; জাগৃতি প্রকাশনী; ২০১৩, মূল্য - ৬০০ টাকা।
৪২. সময়ের পরশ পাথর; আনন্দধারা, ২০১৩, মূল্য - ১০০০ টাকা।
৪৩. জেলা, উপজেলা ও নদ-নদীর নামকরণের ইতিহাস; গতিধারা; ২০১২, মূল্য - ৬০০ টাকা।
৪৪. শুদ্ধ বানান চর্চা; শুবাচ , ২০১৪, মূল্য - ১৫০ টাকা।
৪৫. রাজকীয় জীবন, শারমেয় মরণ; হাওলাদার প্রকাশনী, ২০১৩; মূল্য - ১৫০ টাকা।
৪৬. আন্তর্জাতিক দিবস (রঙিন); হাওলাদার প্রকাশনী; ২০১৪, মূল্য - ৫৫০ টাকা।
৪৭. স্বপ্ন জড়ানো পাহাড়; বিজয় প্রকাশনী; ২০১২, মূল্য - ২০০ টাকা।
৪৮. গদাই বাবুর তীর্থযাত্রা; মিজান পাবলিশার্স, ২০১১; মূল্য - ৭৫ টাকা।
৪৯. Women marriage and love, ড. মোহাম্মদ আমীন, হাওলাদার প্রকাশনী।
৫০. রঙ্গরসে বাংলা বানান, ড. মোহাম্মদ আমীন, হাওলাদার প্রকাশনী
৫১. অফিস-আদালতে বাংলা লেখার নিয়ম, ড. মোহাম্মদ আমীন, মাওলা ব্রাদার্স।
৫২. বিড়ম্বনা, ড. মোহাম্মদ আমীন, জাগৃতি প্রকাশনী।
৫৩. শুদ্ধ বানান চর্চা, ড. হায়াৎ মামুদ ও ড. মোহাম্মদ আমীন
৫৪. বাংলা সাহিত্যে পুলিশের ভূমিকা
৫৫. দাপ্তরিক প্রমিত বাংলা বানান নির্দেশিকা
৫৬. বাংলা বানান কোথায় কী লিখবেন
৫৭. বাংলা শব্দের পৌরানিক উৎস
৫৮. ভূত অঙ্কের জিরো থিওরি
৫৯. ভেত ভূতের ইন্তেকাল
৬০. ক্যাপ্টেন হিরাম কক্স
৬১. মানুষ ও বিড়াল

জল দুনিয়ার মানুষ / মাহবুব হোসেন


‘জল দুনিয়ার মানুষ’ একটি উপন্যাস। বাস্তবতা ও কর্মস্থলে অর্জিত অভিজ্ঞতার আলোকে রচিত এ উপন্যাসটি বাংলা সাহিত্যের উপন্যাসের ভাণ্ডারে একটি অনন্য সংযোজন হিসাবে বিবেচিত। খুলনা বিভাগের 
ভবদহ নামটি জলাবদ্ধতার কারণে সারা দেশে, এমনকি বিদেশেও আলোচনা ও নিষ্ঠুর প্রাকৃতিক প্রতিশোধের এক করুণ স্মৃতি। যশোর ও খুলনা জেলার চারটি উপজেলার মানুষের অভিশাপ ভবদহ, ভবদহ স্লুইস গেইট। অভয়নগর উপজেলার ভবদহ এলাকায় নির্মিত স্বপ্নের স্লুইস গেইট কীভাবে মানুষের দুঃসহ যাতনার কারণ হয়ে উঠেছে তার সকরুণ বিবরণ উপন্যাসটির মূল আলেখ্য। এখানকার মানুষ আগে কেমন ছিল এখন কেমন তাদের জীবনযাত্রা, কীভাবে তারা সারাবছর জলের উপর বাস করছে তার বিবরণ পড়লে পাঠকমাত্রই ভয়ে শিউরে উঠবেন।
ভবদহে আসলে মাটি নেই। তাহলে মানুষ কীভাবে বাস করে? কীভাবে জলে কোনরূপ জলযান ছাড়া মানুষ বাস করছে তা এ উপন্যাসে লেখক তুলে ধরেছেন। এ এক নৃশংস অভিজ্ঞতা। প্রকৃতিবিরুদ্ধ কাজ করলে প্রকৃতি কীভাবে তার প্রতিশোধ নেয় - তার জীবন্ত চিত্র ড. মোহাম্মদ আমীনের জল দুনিয়ার মানুষ।
অনন্যা থেকে প্রকাশিত উপন্যাসটির মূল্য একশত ষাট টাকা।বইটি পড়ুন, তারপর বুঝতে পারবেন, ভবদহ এলাকার মানুষ কত কষ্টে আছে।

চকরিয়ার ইতিহাস/ অনুসিন্থিয়া জাহান চৌধুরী


ড. মোহাম্মদ আমীন বাংলাদেশের একজন প্রথিতযশা গবেষক। তিনি ইতিহাস, বাংলা ভাষা ও সাহিত্য, ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, গবেষক, প্রাবন্ধিক, জীবনীকার, রম্যরচয়িতা ও জীবনীকার হিসেবে বেশ পরিচিত ও সুনামের অধিকারী।আঞ্চলিক ইতিহাস লেখায় তিনি বাংলাদেশে অনত্যম কৃতিত্বের অধিকারী একজন বিরল ব্যক্তিত্ব।
কক্সবাজার জেলার প্রবেশদ্বার হিসাবে খ্যাত ‘চকরিয়া’ বাংলাদেশের একটি ঐতিহ্যবাহী উপজেলা। আর্থ-সামাজিক কর্মকাণ্ড, জন-বৈচিত্র্য, প্রাকৃতিক শোভা প্রভৃতি বিবেচনায় এ রকম অনিন্দ্য উপজেলার সংখ্যা বাংলাদেশে খুব একটা বেশি নেই। তবু এ উপজেলার ইতিহাস রচিত হয়নি দীর্ঘ কয়েক হাজার বছরেও। ড. মোহাম্মদ আমীন চকরিয়ার উপজেলা ম্যাজিস্ট্রেট হিসাবে যোগদানের পর চকরিয়ার ইতিহাস লিখতে শুরু করেন। কঠোর পরিশ্রম ও মেধার সমন্বয় ঘটিয়ে তিনি রচনা করেন চকরিয়ার উপজেলার প্রথম ইতিহাস। কেউ স্বীকার করুন বা না-করুন, গ্রন্থটি রচনা করে ড. মোহাম্মদ আমীন ঐতিহ্যবাহী চকরিয়ার ইতিহাসে  ইতিহাস হয়ে রয়ে যাবেন আযুগ।

এটি শুধু ইতিহাস নয়, অর্থনীতি, সমাজ, রাজনীতি, নৃতত্ত্ব, ধর্ম, বিজ্ঞান, সাহিত্য, ভুগোল, জনমিতি প্রভৃতির তথ্যবহুল বিবরণে ঋদ্ধ একটি অনবদ্য গ্রন্থ। কী নেই এখানে? ইতিহাস কত প্রাণবন্ত হতে পারে, হতে পারে কত জীবন্ত এবং সাবলীল তা এ গ্রন্থটি না পড়লে অনুধাবন করা যাবে না।
ছয়ত্রিশ অধ্যায়ে পরিব্যাপ্ত এ ইতিহাসগ্রন্থে চকরিয়ার প্রাচীনত্ব, জনতাত্ত্বিক বিশ্লেষণ; আয়তন, অবস্থান ও প্রশাসনিক কাঠামো; চকরিয়ার নামকরণ, ইউনিয়ন ও গ্রামসমূহের নামকরণ, চকরিয়ার প্রাগৈতিহাসিক যুগের ইতিাহাস, সামন্ত শাসন, চন্দ্র ও দেব বংশের আমলে চকরিয়া, ভেসালি রাজ্য ও মুসলিম অভিযান, চকরিয়ায় মুসলমানদের আগমন, সুলতানি আমল, আফগান আমল, চকরিয়ায় শাহ শুজা, আরাকানি আমল,  ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির আমলে চকরিয়া, ব্রিটিশি আমল, মুক্তিযুদ্ধ ও চকরিয়া, চকরিয়ার পার্লামেন্ট প্রতিনিধি, ঐতিহ্যময় চকরিয়া, চকরিয়ার ঐতিহ্য ও কৃষ্টি, চকরিয়ার সুন্দরবন, ইসলামি ও আধুনিক শিক্ষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও ক্রীড়া, সাংবাদিক, সংবাদপত্র ও প্রকাশনা, ধর্ম ও ধর্মীয় উৎসব, ধর্ম ও ধর্মীয় বিকাশ, রাখাইন ভাষা ও সাহিত্যাঙ্গন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, ঐতিহাসিক ও দর্শনীয় স্থান, জাতীয় উন্নয়নে চকরিয়ার ভূমিকা, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড, লবণ ও হিমায়িত মাছ, চকরিয়ার বাইরে চকরিয়া, একনজরে চকরিয়া প্রভৃতি বিবরণ চমৎকার ভাষায় তুলে ধরা হয়েছে।
চকরিয়াবাসী ছাড়াও দেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্য সম্পর্কে আগ্রহী সবার কাছে বইটি একটি অমূল্য সংগ্রহ হিসাবে বিবেচিত হবে। ড. মোহাম্মদ আমীনকে চকরিয়ার মানুষ ভুলে যেতে পারে কিন্তু চকরিয়া ও চকরিয়ার ইতিহাস কোনদিন ভুলতে পারবে না। কারণ ইতিহাস স্থানের মতো স্থান ও ভূমির সঙ্গে অবিচ্ছিন্ন হৃদ্যতায় জড়িত।