Friday, 20 January 2017

স্যমন্তক অনবদ্য এক উপন্যাস / হায়াৎ মামুদ

অধ্যাপক ড. হায়াৎ মামুদ

উপন্যাস নির্মল আনন্দের উৎস। তাই সাহিত্যজগতে উপন্যাস সবচেয়ে জনপ্রিয়। কোনো কোনো উপন্যাস পাঠকের মনে গভীর দাগ কাটে। উপন্যাসের অচেনা-অজানা চরিত্রসমূহে মনপ্রাণ একাকার হয়ে যায়। গভীর নিবেশে আবেশিত হয়ে ওঠে হৃদয়। ব্যক্তিগতভাবে অচেনা চরিত্রগুলোও ভাবনায় শিহরণ তোলে। যদি আপনি এমন একটা উপন্যাস পড়েন, যার প্রায় সবকটি চরিত্র আপনার পরিচিত, শ্রদ্ধার্হ,
খ্যাতিমান ও প্রিয়- তাহলে কেমন লাগবে? কেমন শিহরিত আনন্দে কেঁপে উঠবে অনুভূতি? ভাষায় এটি প্রকাশ করা যায় না। তবে, স্যমন্তক উপন্যাস পড়লে এমন বিরল অনুভূতির পুরোটাই আস্বাদন করতে পারবেন। পরিচিত চরিত্রসমূহের বুদ্ধিদীপ্ত সংলাপ ‘স্যমন্তক’ উপন্যাসের অন্যতম আকর্ষণ। প্রতিটি লাইনই মুখস্থ করে রাখার মতো। অন্তত এজন্য হলেও ড. মোহাম্মদ আমীনের লেখা ‘স্যমন্তক’ পড়ে দেখতে পারেন। 
স্যমন্তক কোনো সাধারণ উপন্যাস নয়। বাস্তবতার নিরিখে রচিত এ উপন্যাসের শৈল্পিক বিবরণ বস্তি
স্যমন্তকের প্রচ্ছদ
হতে রাজপ্রসাদ পর্যন্ত বিস্তৃত। প্রেসিডেন্ট, মন্ত্রিপরিষদ সচিব এবং নব্বইয়ের দশকে বাংলা সাহিত্যের উদীয়মান অধিকাংশ সাহিত্যিক, শিক্ষক, প্রশাসক ও বুদ্ধিজীবী স্যমন্তকের চরিত্র। উদাহরণস্বরূপ কবীর চৌধুরী, হাসনাত আবদুল হাই, হুমায়ুন আযাদ, জাতীয় অধ্যাপক আবদুর রাজ্জাক, আলাউদ্দিন আল আযাদ, ইতিহাসবেত্ত আবদুল হক, মনিরুজ্জামান, আনিসুজ্জামান, হায়াৎ মামুদ, অরুণাভ সরকার, এস এম সুলতান, নরেন বিশ্বাস, দেলোয়ার হোসেন, সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, আহমদ ছফা প্রমূখের নাম উল্লেখ করা যায়। আমার একজন ছাত্রী স্যমন্তকের নায়িকা। বস্তিতে বেড়ে ওঠা এ মেয়েটা এখন অক্সফোর্ডের অধ্যাপক। বস্তি থেকে অক্সফোর্ড- কীভাবে সম্ভব হলো? বস্তুত এর অনাস্বাদিতপূর্ব বিবরণই স্যমন্তক। 
স্যমন্তক কী ধরণের উপন্যাস? নানামুনির নানা মত। কেউ বলেন, মনস্তত্বমূলক উপন্যাস। কেউ বলেছেন, আত্মজীবনীমূলক স্মৃতিচারণ। কারও কাছে এটি চেতনাপ্রবাহমূলক উপন্যাস। এক ঔপন্যাসিক
স্যমন্তকের লেখক ড. মোহাম্মদ আমীন
বলেছেন, এটি কাব্যধর্মীমূলক প্রেমকাহিনি, একজন বলেছেন সামাজিক উপন্যাস। কযেকজন এটাকে আর্থ-সমাজিক প্রেক্ষাপটে বিধৃত ঐতিহাসিক উপন্যাস হিসাবেও মন্তব্য করেছেন। বিখ্যাত একজন সমালোচকের ভাষায়, এটি উদ্দেশ্যমূলক কাহিনি উপন্যাস। লেখকের মতে, জৈবন্তিক উপন্যাস। আমার মতে, এটি এখানে বর্ণিত সবধরণের উপন্যাসের সমন্বয়ে গঠিত একটি ব্যাষ্টিক উপন্যাস। যেখানে সকল প্রকার উপন্যাসের স্বাদ একসঙ্গে পাওয়া যায়। এ যেন একের ভেতর অনন্ত। যেদিক দিয়ে বিবেচনা করা হোক না কেন, সব উপাদান দেখা যায় স্যমন্তকে। অনাত্মীয়ও কীভাবে মহা-আত্মীয় হয়ে যায় তার একটি চমৎকার দলিল স্যমন্তক। 
স্যমন্তক উপন্যাসের বুদ্ধিদীপ্ত সংলাপ আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। প্রতিটি লাইনই মুখস্থ করে রাখার মতো। ভালোবাসা- দ্রোহ, স্নেহ-প্রেম, স্বার্থিক দ্বন্দ্ব, মায়া-মমতা-অভিমান, আর্থ-সামাজিক অবস্থা, পিতাপুত্র-পরিবার, ধর্ম, রাজনীতি, ইতিহাস, নগরজীবন, গ্রামীণজীবন, মূল্যবোধ, শিক্ষাব্যবস্থা, যোগাযোগ, প্রশাসন, অতীত-বর্তমান-ভবিষ্যৎ, বিশ্বপ্রকৃতি এমনকি বস্তি হতে শুরু করে মনুষ্য জীবনের সঙ্গে জড়িত সবকটি বিষয় নিখুঁত মাধুর্যে বিধৃত হয়েছে। স্যমন্তক অনবদ্য এক উপন্যাস।
উপন্যাসের চরিত্রসমূহ অধিকাংশ পাঠকের কাছে পরিচিত। তাই লেখককে খুব সাবধানে লিখতে হয়েছে প্রতিটি সংলাপ। ঋদ্ধ সংলাপের সঙ্গে পরিশীলিত রসবোধ, উত্তম উদ্দেশ্য, ভাবনার প্রসারতা ও মানবতার স্ফূরণ উপন্যসটিকে অনবদ্য করে তুলেছে। জীবন থেকে নেওয়া ঘটনায় বিন্যস্ত এমন হৃদয়গ্রাহী পরিপূর্ণ উপন্যাস ইতোঃপূর্বে আমি পড়িনি। উদ্দেশ্য, কাহিনি, চরিত্র, বিষয়-বর্ণন, বুদ্ধিদীপ্ত সংলাপ, কাব্যিকতা, পরিশুদ্ধ জীবনবোধ, স্পর্শকাতর সম্পর্ক ও পরিণতি বিবেচনায় বাংলা সাহিত্যে এমন আর কোনো উপন্যাস আছে বলে আমার জানা নেই। এটি হতে পারে বাংলা সাহিত্যের একটি শ্রেষ্ঠ উপন্যাস।

Tuesday, 17 January 2017

স্যমন্তক : মানবতার নিটোল শিহরণ / অধ্যাপক দীপক কুমার নাগ


স্যামন্তক

মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য- এ দার্শনিক কথাটির সত্যতা কি আপনি খুঁজতে চান? এজন্য আপনাকে হিমালয় অথবা কোনো পর্বতমালার পাদদেশে যেতে হবে না। আপনি এক কপি স্যমন্তক সংগ্রহ করে নিন। 
প্রথমত মনে হতে পারে, এ বুঝি লেখক তাঁর কল্পনার ফানুসে মনের আবেগ ও মাধুরী মিশ্রিত করে পাঠকদের জন্য একখানা গল্প বানিয়েছেন। যে কাজটি কবি-সাহিত্যিকগণ সাধারণত করে থাকেন। না, তা নয়। স্যমন্তক বাস্তব ঘটনার তিল তিল মাধুরী দিয়ে সৃষ্ট একটি উপন্যাস- যার লাইনে লাইনে রয়েছে জীবনাভিজ্ঞতার উন্মেষে লালিত মানবতাবোধের নিটোল শিহরণ।
স্যমন্তকের নায়িকা চরিত্রে যিনি রয়েছেন (জানি না সে কে?)। নায়ক (যিনি লেখক) আমার দৃষ্টিতে একজন মানুষ। দেবত বলব না, কারণ দেবতাদের মাঝেও যে স্বার্থপরতা রয়েছে! কেননা, দেবতাও তার ঘরে আশ্রয় নেয়, যে ঘরে ফুলচন্দন বেশি পড়ে। 
এদিক থেকে স্যমন্তকের নায়ক (লেখক) একজন মানুষের দর্শন নিয়ে যে কাজটি জীবনে করেছেন- সেই একটি কাজের জন্যই আমি তার জীবনকে নিঃসংশয়ে ধন্য হয়ে গিয়েছে বলতে পারি। তার আর কোনো কাজ না-করলেও চলবে। 
স্যমন্তকের প্রেরণ প্রেরিত হোক জনে জনে। স্যমন্তক ধন্য করুক মানুষের মনুষ্যত্ব, জয় হোক মানবতার!

Saturday, 14 January 2017

স্যমন্তক / ড. সাহিদা সুলতানা অনি

 স্যমন্তক কেন পড়বেন

ড. মোহাম্মদ আমীনের লেখা স্যমন্তক উপন্যাসের কাহিনি পৌরাণিক স্যমন্তকের কাহিনির চেয়েও আকর্ষণীয়, হৃদয়গ্রাহী ও মুগ্ধকর। বাস্তবতা আর জীবনের উত্তম বিষয় থেকে তিল তিল উত্তম বিষয়সমূহ নিয়ে এ তিলোত্তম উপন্যাসটি রচিত। পৌরাণিক স্যমন্তক ছিল মহামূল্যবান মণি। যে মণির স্পর্শে স্বর্ণে পরিণত করা যেত সাধারণ কিছু বস্তুকে। তবে পরশ পাথরের সঙ্গে স্যমন্তকের তফাৎ আছে। যে কেউ পরশ পাথর অধিকারে রাখতে পারতেন এবং এর স্পর্শে যে কোনো কিছুকে স্বর্ণে পরিণত করা যেত। তবে স্যমন্তক এমন একটি মণি, যা অধিকারে রাখতে হলে তার কিছু গুণ থাকা আবশ্যক ছিল। শুধু তাই নয়, কোনো বস্তুকে স্যমন্তকের স্পর্শে স্বর্ণে পরিণত করতে হলে ওই বস্তুটিরও কিছু যোগ্যতা থাকতে হতো। 
পৌরাণিক স্যমন্তক একটি মহামূল্যবান মণি। আমাদের স্যমন্তক মণি নয়, মহামূল্যবান একজন মানুষ।উপন্যাসের নায়ক। যার পরশে অতি সাধারণ মানুষও পরিণত হয়েছে মূল্যবান মানুষে। পৌরাণিক স্যমন্তক ছিল সূর্যদেবের কণ্ঠহারের রত্ন | বিষ্ণু পুরাণ এবং মহাভারত অনুযায়ী এই রত্ন সোনার চেয়ে ৮ গুণ বেশি উজ্জ্বল ছিল | পৌরাণিক স্যমন্তকের আকর্ষণ ছিল উজ্জ্বলতা।আমাদের স্যমন্তকের আকর্ষণ ভালোবাসা।যা স্বর্ণের চেয়ে কোটি গুণ অধিক উজ্জ্বল। ভালোবাসা মানুষকে স্যমন্তকে পরিণত করতে পারে। কীভাবে একজন সাধারণ মানুষ স্যমন্তকের মতো মহামূল্যবান হয়ে উঠতে পারে এবং কীভাবে অন্যকেও অমন মূল্যবান করে তুলতে পারে - তা জানার জন্য উপন্যাসটি একবার হলেও পড়া প্রয়োজন।

স্যমন্তক মণি ছিল সূর্যদেবের কণ্ঠহারের রত্ন | বিষ্ণু পুরাণ এবং মহাভারত অনুযায়ী এই রত্ন সোনার চেয়ে ৮ গুণ
বেশি উজ্জ্বল ছিল | সূর্যদেব খুশি হয়ে স্যমন্তক মণি উপহার দেন তাঁর পরম ভক্ত দ্বারকার সত্রাজিৎকে | কৃষ্ণ তাঁকে অনুরোধ করেন ওই মণি রাজা উগ্রসেনকে দিয়ে দেওয়ার জন্য | কিন্তু তাঁর কথা উপেক্ষা করেন সত্রাজিৎ | তিনি ওই রত্ন দেন তাঁর ভাই প্রসেনকে | 

একদিন প্রসেন ওটি কণ্ঠহারে পরে গেলেন শিকারে | গাছে বসে এক সিংহকে তাক করেছেন তিনি | গলায় ঝুলছে দুর্লভ মণি | হঠাৎ হিসহিস শব্দ শুনে উপরে তাকান প্রসেন | চমকে দেখেন‚ মাথার উপরে দুলছে বিষাক্ত সাপ |উপরে সাপ‚ নিচে সিংহ‚ কী করবেন বুঝতে না পেরে লাফ দিলেন প্রসেন | যে কণ্ঠহারে ছিল স্যমন্তক‚ সেটি গাছের ডালে জড়িয়ে গলায় ফাঁস লেগে মৃত্যু হল প্রসেনের | জমিতে ছিটকে পড়ল স্যমন্তক | 

উজ্জ্বলতা দেখে সিংহ সেটিকে নিয়ে গেল মুখে করে | কিন্তু পথে এসে পড়ল ভাল্লুকরাজ জাম্বুবান | তিনি সিংহকে মেরে হস্তগত করলেন মণি |এদিকে প্রসেনকে না পেয়ে সত্রাজিৎ হাজির কৃষ্ণের কাছে | তিনি সরাসরি দোষারোপ করলেন‚ মণির লোভে প্রসেনকে হত্যা করেছেন কৃষ্ণ নিজে | অতঃপর অপরাধ খণ্ডাতে কৃষ্ণ নিজে গেলেন প্রসেনের সন্ধানে |
গভীর বনে গিয়ে কৃষ্ণ দেখতে পেলেন প্রসেনের নিথর দেহ | কিন্তু উধাও স্যমন্তক | কৃষ্ণ জমিতে সিংহের পদচিহ্ন অনুসরণ করে এগোলেন | দেখলেন পড়ে আছে পশুরাজের দেহ | বুঝলেন তার সঙ্গে অন্য কোনও পশুর ধস্তাধস্তি হয়েছে |
এবার নতুন করে বনভূমির রেখা অনুসরণ করে এগোলেন কৃষ্ণ | গিয়ে পৌঁছলেন জাম্বুবানের গুহামুখে | গুহামুখে বেরিয়ে আসা উজ্জ্বল ছটা দেখে বুঝলেন গুহার ভিতরেই আছে স্যমন্তক | সঙ্গীদের বাইরে রেখে একাই প্রবেশ করলেন কৃষ্ণ | দেখলেন‚ রত্ন নিয়ে খেলছে জাম্বুবানের পুত্র ! 

সেই মুহূর্তে কৃষ্ণের সামনে এলেন জাম্বুবান | দুজনের ভিতর যুদ্ধ হল টানা ২৮ দিন ধরে | অবশেষে আত্মসমর্পণ করলেন ভাল্লুকরাজ | কৃষ্ণের হাতে ফিরিয়ে দিলেন স্যমন্তক | সেইসঙ্গে নিজের মেয়ে জাম্ববতীকে | বিবাহ সম্পন্ন হল কৃষ্ণ-জাম্ববতীর |মণি এবং নববধূকে নিয়ে দ্বারকায় ফিরলেন কৃষ্ণ | ভুল বুঝতে পেরে ক্ষমা চাইলেন সত্রাজিৎ | অনুতপ্ত হয়ে কৃষ্ণকে দিতে চাইলেন স্যমন্তক মণিসহ নিজের তিন মেয়ে সত্যভামা‚ ব্রতীনি এবং প্রস্ববিনীকে |  

সত্রাজিৎ কন্যাদের পানি গ্রহণ করলেন শ্রীকৃষ্ণ | কিন্তু নিলেন না স্যমন্তক | সেটি রয়ে গেল সত্রাজিতের কাছেই |এদিক সত্যভামার প্রতি অনুরক্ত ছিলেন দ্বারকার শতধন্ব‚ অক্রূর এবং কৃতবর্মা | তাঁরা সত্রাজিতের এই আচরণ মেনে নিতে পারেননি | একদিন‚ কৃষ্ণ-বলরাম গেছেন হস্তিনাপুরে | ঘুমন্ত সত্রাজিতকে হত্যা করে স্যমন্তক মণি চুরি করলেন শতধন্ব | পরে আতঙ্কিত হয়ে ওই রত্ন অক্রূরের কাছে রেখে পালিয়ে যান তিনি | 

সব জানতে পেরে দ্বারকায় ফিরে আসেন কৃষ্ণ-বলরাম | দুজনে শতধন্বের সন্ধানে গেলেন | মিথিলার কাছে কৃষ্ণের হাতে প্রাণ হারালেন শতধন্ব | আরও একবার বার কৃষ্ণ স্যমন্তক মণি নিয়ে ফিরলেন দ্বারকায় | তিনি এ বার স্যমন্তক মণি দিয়ে দিলেন অক্রূরকে | একটা শর্তে‚ যেন এই মণি কোনওদিন দ্বারকার বাইরে না যায় | এইভাবে স্যমন্তক ফিরে এল দ্বারকায় | একইসঙ্গে কৃষ্ণ চারজন দার পরিগ্রহ করলেন | 

কৃষ্ণের প্রয়াণ বা দ্বারকার পতনের পরে এই মণির কী হয়েছিল তা বলা হয়নি মহাকাব্য বা পুরাণে | অনেকে মনে করেন ‚ কোহিনূর হিরেই হল পুরাণের স্যমন্তক | যদিও এই মত অগ্রাহ্য করেন বেশিরভাগ পণ্ডিত এবং রত্ন বিশেষজ্ঞ | তাঁরা মনে করেন এই রত্ন ছিল আসলে একটি দুর্লভ চুনী ।

স্যামন্তক / ড. হায়াৎ মামুদ

‘স্যমন্তক’ 
স্যমন্তক’ ড. মোহাম্মদ আমীনের লেখা একটি উপন্যাস।একজন বললেন, এটি মনস্তাত্বিক উপন্যাস। পাণ্ডুলিপি পড়ে আমার মনে হয়েছে, এটি শুধু মনস্তাত্ত্বিক উপন্যাস নয়।
ভালোবাসা, স্নেহ-প্রেম, দ্রোহ-অভিমান, রাষ্ট্র, রাজনীতি, সমাজ, অর্থনীতি, বিশ্ব, প্রকৃতি-পরিবেশ প্রভৃতি হতে শুরু করে মনুষ্য জীবনের সঙ্গে জড়িত সবকটি বিষয় নিখুঁত মাধুর্যে বিধৃত হয়েছে। সমাজের হতদরিদ্র হতে শুরু করে প্রেসিডেন্ট পর্যন্ত - এ উপন্যাসের চরিত্রের অন্তর্গত। ঋদ্ধ সংলাপের সঙ্গে পরিশীলিত রসবোধ উপন্যসটিকে অনবদ্য করে তুলেছে। জীবন থেকে নেওয়া ঘটনায় বিন্যস্ত এমন হৃদয়গ্রাহী উপন্যাস ইতোঃপূর্বে আমি পড়িনি।
বিষয়, বর্ণনা, পরিশুদ্ধি, প্রেম, মমতা, চরিত্র, সংলাপ ও কাহিনি বিন্যাস বিবেচনায় বাংলা সাহিত্যে এমন আর কোনো উপন্যাস আছে বলে আমার জানা নেই।