Sunday, 10 February 2019

বাংলা কথায় বাংলা কৌতুক / হায়াৎ মামুদ



‘বাংলা কথায় বাংলা কৌতুক’ এমন একটি বই যা পড়লে একই সঙ্গে হাসি আর জ্ঞান দুটোই পাবেন।  বাংলা বানান, ব্যাকরণ ও বাক্যচয়নের ভুলকে লেখক ছোটো ছোটো কৌতুকের মাধ্যমে তুলে ধরেছেন। আশা করি হাসি আর আনন্দের মাঝে শেখার এই কৌশলটি আপনার ভালো লাগবে। 
হাসির অনেকগুলো উৎস রয়েছে। কৌতুক তন্মধ্যে অন্যতম। সাধারণত কৌতুকের উদ্দেশ্য হচ্ছে পাঠককে যে-কোনোভাবে হাসানো, কেবল হাসাতে পারলেও হলো, কিন্তু এমন অনেক কৌতুক আছে, যা কেবল হাসায় না, হাসানোর সঙ্গে সঙ্গে জ্ঞান আর বুদ্ধিকেও শানিত করে। ড. মোহাম্মদ আমীনের ‘বাংলা কথায় বাংলা কৌতুক’ এমন একটি বই। যেটি পড়বেন- পড়ে বাংলা বানান শিখবেন আর হাসবেন। ইচ্ছা করলে অন্যকেও শোনাতে পারেন, তাঁরাও আপনার হাসির সঙ্গে হাসবেন। আড্ডাতে শোনাতে পারলে তো আর কথাই নেই। শুধু তাই নয়, আপনি যদি শিক্ষক হন তো আপনার শিক্ষার্থীদের এবং শিক্ষার্থী হলে আপনার শিক্ষকদেরও শোনাতে পারেন। কী মজা হবে তাই না? মানুষকে নির্মল আনন্দ দিতে পারার মধ্যেই তো জীবনের আসল সার্থকতা নিহিত।
হাসির মাঝে শেখার কৌশল শিক্ষার কার্যকর উপায় হিসেবে স্বীকৃত। পঠন-পাঠনে আনন্দ না থাকলে তা বোঝা হয়ে যায়। বোঝা নিয়ে কেই-বা বেশি দূর যেতে পারে? আমি শিক্ষক মানুষ, পড়ানোর সামর্থ্য
কতটুকু ছিল জানি না, কিন্তু আমার ক্লাসের ছেলেমেয়েরা খুব মনযোগ সহকারে আমাকে শুনত। এ মনযোগের কারণই ছিল অ্যাকাডেমিক পঠন-পাঠনের মাঝে দু-একটা এ ধরনের শিক্ষামূলক কৌতুক ছুঁড়ে দেওয়া। তারাও উপভোগ করত, আমিও করতাম, মজা পেতাম, তারাও পেত। আনন্দই তো শিক্ষা, বোঝা কি কখনও শিক্ষা হয়? অধিকন্তু, আনন্দের মাঝে শিক্ষাগ্রহণ করা গেলে তা মন কখনও মোছে না।
‘বাংলা কথায় বাংলা কৌতুক’ এমন একটি বই যা পড়লে একই সঙ্গে হাসি আর জ্ঞান দুটোই পাবেন।  বাংলা বানান, ব্যাকরণ ও বাক্যচয়নের ভুলকে লেখক ছোটো ছোটো কৌতুকের মাধ্যমে তুলে ধরেছেন। আশা করি হাসি আর আনন্দের মাঝে শেখার এই কৌশলটি আপনার ভালো লাগবে।

Monday, 21 January 2019

নিউটনের ছাত্রী / প্রমিতা দাশ লাবণী


অসাধারণ মেধাবী সেলিমা আসলে নিউটনের ছাত্রী ছিল না, লেখকের ছাত্রী ছিল।চট্টগ্রামের জনৈক অশিক্ষিত কোটিপতির অশিক্ষিত বড়ো ছেলে লেখকের কাছে তার বোনকে পড়ানোর প্রস্তাব নিয়ে এসে বলেছিলেন, “আমার বোন নিউটনের ছাত্রী। পুরো তল্লাটে তার মতো মেধাবী কেউ নেই।”
লেখক রাজি হয়ে গেলেন। আসলে, নিউটনের ছাত্রীকে পড়ানোর আগ্রহ দমাতে পারেননি। পড়াতে গেলে, পরিচয় পর্বে সেলিমা বলেছিল, “নিশ্চয় ভাইয়া আমাকে নিউটনের ছাত্রী হিসেব পরিচয় দিয়েছেন?”
হ্যাঁ।
“আমি কিন্তু নিউটনের ছাত্রী নই”, সেলিমা বলেছিল, “নিউটেনের ছাত্রী।তবে, ভাইয়ার কারণে আমি এখন সবখানে নিউটনের ছাত্রী। তাই বিজ্ঞানী নিউটনকে পুরোপুরি অত্মস্থ করে নিয়েছি। নিউটনের সব তথ্য আমার জানা।লেখক বলেছিলেন, এখন পড়া শুরু করি।“আগে আপনার মেধা যাচাই”, সেলিমা লেখককে বিস্মিত করে দিয়ে বলেছিল।মানে! লেখকের প্রশ্নে ছিল ক্ষোভ, লজ্জা আর কিছুটা সংকোচ।“আমাকে পড়াতে পারবেন কি না দেখতে হবে না? ইন্টারভিউ ছাড়া চাকুরি হয় না”, বলেই সেলিমা প্রশ্ন করেছিল, নিউটনের পিতামহের নাম কী?জানি না, সোজা উত্তর লেখকের।এই প্রশ্নটা কী আমাদের পরীক্ষায় আসবে?আসতে পারে আবার না-ও আসতে পারে, কিন্তু জানা থাকা ভালো।এরপর আরো প্রশ্ন, প্রশ্নের পর প্রশ্ন। সেলিমার ত্রিশ ভাগ প্রশ্নের উত্তরও দিতে পারেননি লেখক। সেলিমা হেসে বিনয়ের সঙ্গে বলেছিল, স্যার, আপনি তো অনেক কিছু জানেন না, আমাকে কীভাবে পড়াবেন?লেখক বলেছিলেন, সবাই হয়তো সবকিছু জানে, কিন্তু একজনে সবকিছু জানে না। যেগুলো আজ পারলাম না, সেগুলো আগামীকাল জেনে এসে জানাব। কিন্তু আমি তো ফেল করেছি।না, পাস করেছেন, সেলিমা খুশিতে উদ্ভাসিত হয়ে বলেছিল, “এ পর্যন্ত যত শিক্ষক এসেছেন তাদের সবাইকে প্রশ্নগুলো
করেছিলাম, সবাই ধমক দিয়ে বলেছেন, এগুলো পরীক্ষায় আসবে না, পড়ার প্রয়োজন নেই। ক্লাসের বই নাও। একমাত্রই আপনিই বলছেন, পড়ার প্রয়োজন আছে এবং জেনে এসে জানাবেন। আপনিই আমার শিক্ষক হওয়ার উপযুক্ত। ”
লেখক পড়াতে শুরু করলেন সেলিমাকে।পড়াতে পড়াতে তার মেধায় মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন, লেখকের জীবনে দেখা শ্রেষ্ঠ মেধাবীদের অন্যতম একজন ছিল সেলিমা। এসএসসি পরীক্ষায় কুমিল্লা বোর্ডে মেয়েদের প্রথম স্ট্যান্ড করা সেলিমার পরিণতি কী হয়েছিল- এটিই আলোচ্য উপন্যাসের বিষয়বস্তু।বইটির প্রকাশক : পুথিনিলয়প্রচ্ছদ : মোস্তাফিজ কারিগর।পাবেন : অমর একুশে গ্রন্থমেলায় (২০১৯) পুথিনিলয়ের স্টলে।